Playlist 1981 Phil Collins - In The Air Tonight 1981 Foreigner - Waiting for a Girl Like You 1983 The Police - Every Breath You Take 1985 Robert Tepper - No Easy Way Out 1986 Kenny Loggins - Danger Zone 1987 Starship - Nothing Gonna Stop Us Now 1988 Belinda Carlisle - Heaven Is A Place On Earth 1987 U2 - With or Without You 1989 Phil Collins - Another Day In Paradise 1989 Elton Jhon - Sacrifices 1998 Modern Talking - You're My Heart, You're My Soul 2014 The Midnight - Gloria 2014 The Midnight - Los Angeles 2016 The Midnight - The Comeback Kid 2016 The Midnight - Sunset 2016 FM-84 - Running In The Night (feat. Ollie Wride) 2018 Thought Beings - Hazy 2018 The Midnight - Lost Boy 2018 Alex & Megan McDuffee - Avenger 2019 Fury Weekend - Thousand Lights (feat. Megan McDuffee) 2019 Ollie Wride - Back To Life 2014 The Midnight - Days of Thunder 2019 Kalax - Dream 2020 Nina - Automatic Call 1983 Tangerine Dream - Love on a Real Train (OST Risky Business)
গডফাদার - মারিও পূজো (অনুবাদক - শেখ আব্দুল হাকিম)
Godfather by Mario Puzo (Transcribed by Sheikh Abdul Hakim)
নিউইয়র্ক। তিন নম্বর ফৌজদারি আদালত। বসে আছে আমেরিগো বনাসেরা। মনে আশা, সুবিচার পাবে সে। তার মেয়ের ওপর যারা অমানুষিক
নির্যাতন করেছে, যারা বেচারীর ইজ্জত লুঠ করার অপচেষ্টা চালিয়েছে, আইনের মাধ্যমে তাদের
উপর প্রতিশোধ নেয়া যাবে।
থমথম
করছে বিচারকের মুখ। কালো পোশাকের আস্তিন গোটালেন তিনি,
যুবক দু'জনকে নিজের হাতেই যেন কষে ধোলাই
দেবেন। ঘৃণাভরে তাদের দিকে তাকিয়ে আছেন
তিনি।
তবু কেমন যেন
একটা সন্দেহ জাগছে বনাসেরার মনে। সঠিক কিছুই বুঝতে পারছে
না, কিন্তু খুঁতখুঁত করছে মনটা: এসবের মধ্যে কোথায় যেন একটা ছলচাতুরি আছে।
'তোমরা নরাধম!
জঘন্য অপরাধ করেছ।' রাগে কেঁপে উঠলেন বিচারক।
চকচক
করছে ছোট করে
ছাটা দুই যুবকের চুল! লাবণ্যের প্রলেপ মাখা পরিচ্ছন্ন মুখ।
অনুতাপে ম্রিয়মাণ। মাথা হেঁট।
'বুনো জন্তুর মত
আচরণ করেছ তোমরা' কর্কশ, গলায় রায় ঘোষণা করছেন বিচারক। 'সে বেচারীর সতীত্ব নষ্ট করতে পারোনি, এ তোমাদের
সৌভাগ্য-তা যদি করতে, তোমাদের প্রত্যেককে
বিশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হত।'
থামলেন তিনি। তার অদ্ভুত ঘন ভুরু জোড়া
দেখে শ্রদ্ধা জাগে মনে। ভুরুর নিচে চকচক করছে দুটো চোখ। চোখের পাতা কুঁচকে তাকালেন
তিনি। চকিতে বনাসেরার রক্তশূন্য মুখটা দেখে নিলেন একবার।
টেবিলের উপর ফিরে এলো দৃষ্টি।
কাগজপত্রের স্তূপ দেখলেন। মৃদু কুঞ্চিত হলো ভুরু জোড়া,
কাঁধ ঝাঁকালেন। ভাবটা যেন, আর কোন উপায় নেই, তাই নিজের স্বাভাবিক
ইচ্ছার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে তাঁকে।
'তোমাদেরকে আমি
তিন বছরের কারাদণ্ড দিলাম, আবার শুরু করলেন বিচারক। কিন্তু তোমাদের বয়স কম।
এ ধরনের অপরাধ আগে কখনও করোনি। অভিজাত পরিবারের
ছেলে তোমরা । এবং আইনের অপার মহিমা-তাই কখনও সে প্রতিশোধ গ্রহণ
করে না। এই সব বিবেচনা করে তোমাদের এই দণ্ড মওকুফ করা হলো।'
হতাশা
আর ঘৃণায় স্তম্ভিত
হয়ে গেল বনাসেরা। মেয়েটি এখনও হাসপাতালে, তার
দিয়ে জোড়া লাগানো হয়েছে ভাঙা চোয়াল। কুকুর দুটো বেকসুর খালাস পেয়ে
গেল। ভাবছে সে, বেঈমানী করা হলো তার সাথে। ঠকানো হলো। এর নাম বিচার নয়, প্রহসন।
ছেলে
দুটোর মা-বাবার দিকে তাকাল সে। পরম আদরে গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ছেলেদের। কত
খুশি সবাই! হাসি আর আনন্দের প্লাবন বয়ে যাচ্ছে।
গলা
দিয়ে টক টক একটা ভাব উঠে এলো আমেরিগোর। বমি পাচ্ছে তার। সাদা একটা রুমালে চেপে
ধরল মুখ।
দু'পাশে
বসার বেঞ্চ, মাঝখানে অপ্রশস্ত পথ। লম্বা পা ফেলে চলে যাচ্ছে ছেলে দুটো। অনড় দাঁড়িয়ে থাকল বনাসেরা। নড়ার শক্তি নেই। ছেলে দুটোর মুখে আনন্দের হাসি। দৃঢ়
আত্মবিশ্বাসে বুক ফুলিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। তার দিকে ভুলেও একবার তাকাল না।
ইতিমধ্যে
ওদের মা-বাবারাও কাছে এসে পড়েছে। দু'জন মহিলা, দু'জন পুরুষ। সবাই ওর কাছাকাছি বয়সের। পোশাকে-আশাকে ওর
চেয়ে একটু বেশি মার্কিনী। ওর দিকেই তাকিয়ে আছে চারজন। একটু যেন ইতস্তত ভাব রয়েছে
সবার মধ্যে,
কিন্তু চোখেমুখে বিজয়ের অদ্ভুত একটা বেপরোয়া ভাবও রয়েছে, দৃষ্টি এড়াল
না বনাসেরার।
এতক্ষণ
বহু কষ্টে নিজেকে সামলে রেখেছিল সে। হঠাৎ সংযমের বাঁধ ধসে পড়ল। সামনের দিকে ঝুঁকে
বিকৃত কন্ঠে চেঁচিয়ে উঠল সে, 'আমার মত তোমাদেরকেও কাঁদতে হবে। সে ব্যবস্থা আমি করব।'
চোখের উপর রুমাল চেপে ধরল বনাসেরা। পানি
মুছছে।
ঠিক
পিছনেই রয়েছে বিপক্ষের উকিলরা, মক্কেলদের একধারে সরিয়ে নিয়ে একটা দল পাকিয়ে ফেলল
তারা। মা-বাবাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যে ঘুরে দাড়িয়েছে ছেলে দুটো, দলের সঙ্গে যোগ দিল তারাও। তাড়াতাড়ি ছুটে এলো একজন বেলিফ। বনাসেরার বেরিয়ে আসার পথ বন্ধ করে দিল সে। তবে এসবের
কোন প্রয়োজন ছিল
না।
আমেরিকার
আইন শৃঙ্খলার উপর কখনও আস্থা হারায়নি বনাসেরা। সেজন্যেই বৈষয়িক উন্নতি করেছে।
কিন্তু এই মুহুর্তে ঘৃণায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে তার সারা শরীরে। ছেলে দুটোকে কুকুরের
মত গুলি করে খুন করার ইচ্ছে হচ্ছে। নিজেকে সামলে নিয়ে স্ত্রীর দিকে আকাল সে। স্ত্রী
বেচারী কিছুই বোঝেনি তখনও। 'বোকা বানিয়েছে ওরা আমাদের,' বলল
সে। তার মাথার ভিতর ঝড় বয়ে যাচ্ছে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিল সে। 'যা থাকে কপালে, ডন কর্লিয়নির কাছেই যাব আমি । কেঁদে
পড়ব তাঁর কাছে। ন্যায্য বিচার চাই আমি।'
লস এঞ্জেলস। প্রকাণ্ড
এক হোটেলের স্যুইট। লাল একটা
কাউচে শুয়ে রয়েছে জনি ফন্টেন।
হাতে স্কচ হুইস্কির
বোতল। বার
বার বোতল কাত
করে মুখে মদ ঢালছে সে। ঢোঁক গিলছে। পাশেই একটা কাচের পাত্র, তাতে পানি আর বরফের কুচি
রয়েছে। ঢোক গিলেই ঠাণ্ডা পানি মুখে নিয়ে মদের তেতো স্বাদটা
ধুয়ে ফেলছে সে।
ভোর রাত। চারটে
বাজে। মাতাল জনি মতলব আঁটছে, কলঙ্কিনী স্ত্রী আজ বাড়ি ফিরলে হয়, খুন করে ফেলবে তাকে।
কিন্তু বাড়ি যদি ফেরে, তবেই। প্রথমা স্ত্রীকে ফোনে
ডেকে মেয়ে দুটোর খবর নেবে নাকি? নাহ্, সময় নেই এখন, অনেক দেরি হয়ে গেছে। বন্ধুদের
কাউকে ডাকলে কেমন হয়? উঁহু, মন সায় দিচ্ছে না। কে কি ভাববে
কে জানে! সুখ্যাতি আর সাফল্যের সেই চুড়ায় এখন আর নেই সে। ধাপে ধাপে নামতে নামতে অনেক
নিচে নেমে গেছে। এমন একদিন ছিল, ভোর চারটে কেন, যখন ইচ্ছা ডাকলেই পোষা কুকুরের মত
লেজ নাড়তে নাড়তে ছুটে আসত সবাই। সেদিন আর নেই। এখন ওরা তার ডাক পেলে
বিরক্তি বোধ করে। আপন মনে হাসল জনি ফন্টেন। মনে পড়ে যাচ্ছে, যখন নাম ডাক ছিল, হলিউডের
সেরা তারকারাও ওর ব্যক্তিগত সুবিধে অসুবিধের কথা শোনার জন্যে
ব্যগ্র হয়ে
থাকত।
বোতল কাত করে
হুইস্কি ঢেলেছে মুখে, এমন সময় শব্দ হলো। দরজার তালায় চাবি ঢোকাবার শব্দ।
কলঙ্কিনী স্ত্রী আসছে, বুঝতে পেরেও উঠছে না জনি। গলায়
মদ ঢালছে।
কামরায়
ঢুকল মেয়েটা। জনির সামনে এসে দাঁড়াল।
জনির
চোখে কি অপূর্ব সুন্দর এই মেয়ে। চোখ দুটো বেগুনি, সাগরের গভীরতা সেখানে। দেবীর মত
অম্লান মুখ।
নিখুঁত, একহারা, কোমল শরীর। সিনেমার পর্দায় ওর রূপ আরও কয়েকশো গুণ
বেড়ে যায়। দুনিয়ার দশ কোটি পুরুষ মার্গট অ্যাশটনের প্রেমে অন্ধ। গাঁটের পয়সা খরচ
করে ওকে দেখতে যায় তারা।
'কোন চুলোয় যাওয়া
হয়েছিল?' জানতে চাইল জনি।
'কোথায়
আবার, একটু ঢলাঢলি করতে বেরিয়েছিলাম।'
মাতাল
জনি তার উপর কতটা রেগে আছে, বুঝতে পারেনি মার্গট। লাফ দিয়ে ককটেল টেবিলটা টপকাল জনি,
মার্গটের গলা টিপে ধরল। কিন্তু বেগুনি চোখের
এত কাছে এসে কেমন যেন হয়ে গেল জনি। মুহূর্তে পানি হয়ে গেল তার রাগ। এই সময় একটু
ভুল করে বসল মার্গট। ঠোট বাঁকা করে ব্যঙ্গের হাসি হাসল সে। এক পলকে আবার মাথায় রক্ত
চড়ে গেল জনির। মারবে বলে ঘুষি তুলল সে।
‘না-না,
জনি,' চেঁচিয়ে উঠল মার্গট। 'মুখে মেরো না।
আমি এখন ছবি করছি যে!' হাসছে সে।
পেটে
এক ঘুষি মেরে তাকে মাটিতে ফেলে দিল জনি। পরমুহুর্তে ডাইভ দিয়ে পড়ল তার শরীরের উপর।
শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে মার্গটের। হাঁসফাস করছে। তার কনুইয়ে ঘুষি মারছে জনি। চাপড়
মেরে পাঁচ আঙ্গুলের দাগ বসিয়ে দিচ্ছে রোদে পোড়া উরুতে।।
কিশোর বয়সে
হেলস কিচেন, নিউ ইয়র্কের গুণ্ডাপাড়ায় ছোট ছোট ছেলেদের ধরে উত্তম-মধ্যম দিত
জনি, ঠিক সেই রকম করে মারছে তার স্ত্রীকে। ব্যথা কোথাও কম লাগছে না, তবে একটা দাঁত
নড়ে বা নাক ভেঙে রূপের স্থায়ী কোন ক্ষতি হচ্ছে না।
খুব
যে জোরে মারছে জনি, তা নয়। আসলে হাঁতে জোর পাচ্ছে না সে। মার খাচ্ছে, কিন্তু ফিক ফিক
করে হাসছে মার্গট। হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে মেঝেতে, উপর দিকে উঠে গেছে গাউন,
কিন্তু হাসি থামছে না তার। আর সেই সাথে ম্যার হুল ফোটাচ্ছে, 'এসো, জনি, এসো।
কাজ সারো...আসলে তাই তো চাইছ।
উঠে
পড়ল জনি।
গড়িয়ে
সরে গেল মার্গট, নৃত্য-পটিয়সীর মত লাফ দিয়ে উঠে জনির মুখোমুখি দাঁড়াল। ছোট্ট মেয়ের মত নাচছে, নাচতে নাচতে সুর করে বলছে,
'মারেনি, মারেনি! জনি আমাকে মারেনি! হঠাৎ ম্লান হয়ে
গেল তার চেহারা, নাচ থামাল মার্গট। গাম্ভীর্য
ফুটে উঠল চোখেমুখে, তাও নয়ন ভরে দেখার মত সুন্দর। বলল, 'বোকা জনি, তুমি
চিরকেলে বোকা। আহাম্মক, হাতে-পায়ে খিল ধরিয়ে
দিলে আমার। কিভাবে প্রেম করতে হয় তাও তুমি জানো না। আনাড়ী
খোকা। এখনও
তুমি
ভাবো ন্যাকামি ঢংয়ে যেভাবে গান গাইতে, মেয়েদের সাথে সেভাবে
প্রেম করতে হয়! মাথা নাড়ছে মার্গট। বেচারা! তোমাকে আমি করুণাকরি, জনি। গুড বাই,
জনি।' শোবার ঘরে চলে গেল সে। শব্দ শুনে জনি বুঝল ভিতর থেকে দরজায় তাল লাগিয়ে দেয়া
হলো।
মেঝেতে
বসল জনি। মুখ ঢাকল দু'হাতে। অদ্ভুত একটা গ্লানি অনুভব করছে সে। অপমানে, নৈরাশ্যে অস্থির
হয়ে উঠছে মন। নিঃসম্বল হাভাতে ছেলেদেরও প্রাণশক্তির কিছুটা জোর থাকে, সেই জোর
খাটিয়ে ফোন তুলল জনি। একটা ট্যাক্সি ডাকল। এয়ারপোর্টে যাবে।
ফিরে যাবে নিউইয়র্কে। ক্ষমতা দরকার ওর। দরকার বিচক্ষণ পরামর্শ। ভালবাসা দরকার, দরকার আত্মবিশ্বাস।
এসব তাকে মাত্র একজনই দিতে পারেন। পৃথিবীতে একমাত্র তার কাছেই এসব চাইতে পারে জনি। তাঁর কাছেই যাচ্ছে সে। তিনি ওর ধর্মপিতা। গড ফাদার।
ডন কর্লিয়নি।
Comments
Post a Comment